প্রেম নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের উক্তি গুলো খুবই আকর্ষণীয় হয়। হুমায়ুন আহমেদের প্রেমের উক্তিগুলো মূলত প্রেমের জটিলতা ও মানবিক দুর্বলতাকে তুলে ধরে। যেমন একটি বিখ্যাত উক্তি হলো, ভালোবাসার মানুষের সাথে বিয়ে না হওয়াটাই বোধ হয় ভালো। বিয়ে হলে মানুষটা থাকে, ভালোবাসা থাকে না।
এই উক্তিটি বোঝায় যে প্রেমকে কাছে পাওয়ার পর তা যেন স্বাভাবিক জীবনের চাপে তার রহস্যময়তা ও আকর্ষণ হারায়। তিনি প্রেমকে নির্ভরশীলতা, একপেশে দুর্বলতা এবং কষ্টের উৎস হিসেবেও দেখেছেন, যেখানে আনন্দের চেয়ে তৃতীয় পক্ষের বেদনা বা বিচ্ছেদের শূন্যতাই বেশি প্রকট হয়। এই উক্তিগুলো তার লেখায় প্রেমের বাস্তব ও দার্শনিক দিকটি তুলে ধরে।
প্রেম নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের উক্তি
কাউকে প্রচণ্ডভাবে ভালোবাসার মধ্যে এক ধরনের দুর্বলতা আছে। নিজেকে তখন তুচ্ছ এবং সামান্য মনে হয়। এই ব্যাপারটা নিজেকে ছোট করে দেয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দময় জিনিসগুলির জন্যে কিন্তু টাকা লাগে না। বিনামূল্যে পাওয়া যায়। যেমন জোছনা, বর্ষার দিনের বৃষ্টি, মানুষের ভালোবাসা।
প্রেমে পড়া মানেই নির্ভরশীল হয়ে পড়া। তুমি যার প্রেমে পড়বে সে তোমার জগতের একটা বিরাট অংশ দখল করে নেবে। যদি কোনো কারণে সে তোমাকে ছেড়ে চলে যায়, তবে সে তোমার জগতের ঐ বিরাট অংশটাও নিয়ে যাবে। তুমি হয়ে পড়বে শূন্য জগতের বাসিন্দা।
ভালোবাসা আর ঘৃণা আসলে একই মুদ্রার দুই পিঠ। প্রেমিক-প্রেমিকার সামনে সেই মুদ্রা ঘুরতে থাকে। যাদের প্রেম যত গভীর, তাদের মুদ্রার ঘূর্ণন তত বেশি।
অপেক্ষা হলো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিহ্ন। সবাই ভালোবাসি বলতে পারে, কিন্তু সবাই অপেক্ষা করতে পারে না।
গভীর প্রেম মানুষকে পুতুল বানিয়ে দেয়। প্রেমিক-প্রেমিকার হাতের পুতুল হন, কিংবা প্রেমিকা হয় প্রেমিকের পুতুল।
ভালোবাসা যদি তরল পানির মতো কোনো বস্তু হতো, তাহলে সেই ভালোবাসায় সমস্ত পৃথিবী তলিয়ে যেত। এমন কী হিমালয় পর্বতও!
চট করে কারো প্রেমে পড়ে যাওয়া কাজের কথা না। অতি রূপবতীদের কারো প্রেমে পড়তে নেই। অন্যেরা তাদের প্রেমে পড়বে, তা-ই নিয়ম।

তরুণী মেয়েদের হঠাৎ আসা আবেগ হঠাৎ চলে যায়। আবেগকে বাতাস না দিলেই হলো। আবেগ বায়বীয় ব্যাপার, বাতাস পেলেই তা বাড়ে।
যখন মানুষের খুব প্রিয় কেউ তাকে অপছন্দ, অবহেলা কিংবা ঘৃণা করে, তখন প্রথম প্রথম মানুষ খুব কষ্ট পায় এবং চায় যে সব ঠিক হয়ে যাক। কিছুদিন পর সে সেই প্রিয় ব্যক্তিকে ছাড়া থাকতে শিখে যায়।
যে জিনিস চোখের সামনে থাকে তাকে আমরা ভুলে যাই। যে ভালোবাসা সব সময় আমাদের ঘিরে রাখে, তার কথা আমাদের মনে থাকে না… মনে থাকে হঠাৎ আসা ভালোবাসার কথা।
পৃথিবীতে অনেক ধরনের অত্যাচার আছে। ভালোবাসার অত্যাচার হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ানক অত্যাচার। এ অত্যাচারের বিরুদ্ধে কখনো কিছু বলা যায় না, শুধু সহ্য করে নিতে হয়।
ভালোবাসা একটা পাখি। যখন খাঁচায় থাকে তখন মানুষ তাকে মুক্ত করে দিতে চায়। আর যখন খোলা আকাশে তাকে ডানা ঝাপটাতে দেখে তখন খাঁচায় বন্দী করতে চায়।
করুণাও এক ধরনের ভালোবাসা, তবে তা ক্ষতিকারক ভালোবাসা। এই ভালোবাসা মানুষকে অসুস্থ করে দেয়।
মেয়েদের এক ধরনের তৃতীয় নয়ন থাকে, যার মাধ্যমে তারা মুহূর্তের মধ্যে বুঝে যায় কেউ তাদের প্রেমে পড়েছে কি না।
যা পাওয়া যায়নি, তার প্রতি আমাদের আগ্রহের সীমা থাকে না। মেঘ আমরা স্পর্শ করতে পারি না বলেই মেঘের প্রতি আমাদের মমতার সীমা নেই।
কাউকে ভালোবাসলে বেশি কাছে যাবার চেষ্টা করতে নাই। তাতে করে কাছে যাবার আকুতি দেখে সে হয়তো দূরে চলে যেতে পারে।
পৃথিবীর সব নারীদের ডাক উপেক্ষা করা যায়, কিন্তু ‘মা’ এর ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা প্রকৃতি আমাদের দেয়নি।
তুমি একটা খারাপ কাজ করেছো তার মানে তুমি একজন মানুষ, তুমি সেই খারাপ কাজটার জন্য অনুতপ্ত তার মানে তুমি একজন ভালো মানুষ।
হুমায়ুন আহমেদের প্রেমের উক্তি সেরাটা
মানুষের স্বভাব হলো, কেউ যখন ভালোবাসে তখন নানান কর্মকাণ্ড করে সেই ভালোবাসা বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, আবার কেউ যখন রেগে যায় তখন তার রাগটাও বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে।
পৃথিবীর সব মেয়েদের ভেতর অলৌকিক একটা ক্ষমতা থাকে। কোনো পুরুষ তার প্রেমে পড়লে মেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তা বুঝতে পারে।
অল্প বয়সের ভালোবাসা অন্ধ গণ্ডারের মতো। শুধুই একদিকে যায়। যুক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, আদর দিয়ে এ গণ্ডারকে সামলানো যায় না।
বেশিরভাগ রূপবতী মেয়ে নকল হাসি হাসে। হাসার সময় ঢং করার চেষ্টা করে। তাদের হাসি হায়েনার হাসির মতো হয়ে যায়।

অধিকাংশ মানুষ কল্পনায় সুন্দর, অথবা সুন্দর দূর থেকে। কাছে এলেই আকর্ষণ কমে যায়। মানুষই একই। কারো সম্পর্কে যত কম জানা যায়, সে তত ভালো মানুষ।
সারা জীবন পাশাপাশি থেকেও এক সময় একজন অন্যজনকে চিনতে পারে না। আবার এমনও হয়, এক পলকের দেখায় একে অন্যকে চিনে ফেলে।
যখন মানুষের খুব প্রিয় কেউ তাকে অপছন্দ, অবহেলা কিংবা ঘৃণা করে… অনেকদিন পরে সে আগের চেয়েও অনেকবেশী খুশি থাকে যখন সে বুঝতে পারে যে কারো ভালোবাসায় জীবনে অনেক কিছুই আসে যায় কিন্তু কারো অবহেলায় সত্যিই কিছু আসে যায় না।
ভাসিয়ে দেবার প্রবণতা প্রকৃতির ভেতর আছে। সে জোছনা দিয়ে ভাসিয়ে দেয়, বৃষ্টি দিয়ে ভাসিয়ে দেয়… আবার প্রবল প্রেম, প্রবল বেদনা দিয়েও তার সৃষ্টজগৎকে ভাসিয়ে দেয়।