বুক ভরা কষ্টের ছন্দ বলতে কোনো আক্ষরিক কবিতার মিল বা তালকে বোঝানো হয় না, বরং এটি হৃদয়ের গভীরে জমাট বাঁধা দুঃখের এক নীরব ও অনুভূতিপ্রবণ প্রকাশ।
যখন কোনো মানুষ গভীর যন্ত্রণায় ভোগেন, তখন সেই কষ্ট সময়ের সাথে সাথে একটি নির্দিষ্ট লয় বা ‘ছন্দ’ তৈরি করে নেয়। এটি হলো সেই বিষাদের সুর, যা নীরবে প্রতি মুহূর্তে হৃদয়ে বাজতে থাকে। কখনো এই কষ্ট চাপা দীর্ঘশ্বাসে, কখনো বা চোখের কোণে লুকানো জলে এর ছন্দ খুঁজে পাওয়া যায়। এটি কোনো বাহ্যিক প্রকাশ না হয়েও জীবনের হতাশা, বঞ্চনা বা হারানোর বেদনাকে এক অদৃশ্য সুরে বহন করে চলে। এই ছন্দ একান্তই ব্যক্তিগত এবং আবেগময় এক অনুভূতি, যা সাহিত্য বা গানে বিষাদের গভীরতা ফুটিয়ে তোলে।
বুক ভরা কষ্টের ছন্দ
নিচে দিচ্ছি **২০টি বুকভরা কষ্টের বড় ছন্দ**—
ভালোবাসা, হতাশা, একাকীত্ব আর বেদনার গভীর অনুভূতি নিয়ে লেখা। প্রতিটি ছন্দই একটু লম্বা ও আবেগপূর্ণ।
কাঁধে মাথা রাখবে বলে যে মানুষটাকে বিশ্বাস করেছিলাম,
আজ সে-ই আমার চোখের নোনা জলের কারণ।
ভালোবাসা নাকি নীল আকাশের মতো—
কিন্তু আমার আকাশে এখন শুধু ঝড় আর বজ্রপাত,
শান্তি নামের শব্দটা যেন ভুলে গেছে বহু দিন।
তোমার দরজায় যে হাত একসময় কাঁপত ভালোবাসায়,
আজ তার শক্তি নেই আর ন Knock করারও।
মানুষ কি এমনই ভুলে যায়—
যার জন্য রাতের ঘুমও ছিলো না,
আজ তাকে মনে করতেও সময় দেয় না?
চোখের পানি শুকিয়ে গেছে বহু আগে,
তবুও মন বলে— কাঁদলে বুঝি হালকা লাগে।
কিন্তু কাঁদার মানুষটাও তো তুমি চুরি করে নিয়েছো,
এখন শুধু নিঃশব্দ ঘর আর চার দেওয়াল—
যেখানে প্রতিধ্বনিও আমার কথা শুনতে চায় না।
একসময় যে রাস্তায় আমরা দু’জন হাত ধরে হেঁটেছিলাম,
আজ সেখানে হেঁটে মনে হয় পৃথিবীটা যেন অচেনা।
পাতা ঝরার শব্দটাও এখন বেদনা মনে হয়—
কারণ প্রতিটা শব্দই মনে করিয়ে দেয়,
তুমি আর আমার পাশে নেই।
মানুষ বলে সময় সব ঠিক করে দেয়—
কিন্তু আমার সময় যেন আঘাতকেই ধরে রাখে।
প্রতিদিন সকাল হয়, সন্ধ্যা আসে,
সবকিছুই বদলায়,
কেবল তোমার অভাব আর আমার কষ্ট ছাড়া।
তোমার জন্য যত হাসি সঞ্চয় করেছিলাম—
আজ সেগুলোই বিষাদ হয়ে বুকের ভেতর জমে আছে।
ভাবতাম তুমি বুঝবে আমাকে,
কিন্তু বোঝা তো দূরের কথা,
তুমি তো শোনার চেষ্টাই করোনি।
ভালোবাসা যদি সত্যিই স্বর্গ হয়,
তাহলে আমি কেন নরকের আগুনে পুড়ছি?
তোমার চলে যাওয়া শুধু একটা ঘটনা ছিলো না—
এটা ছিলো আমার ভেঙে যাওয়ার সূচনা।
যে হাতটা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম সারাজীবন,
আজ সে হাতটা অন্য কারো হাত ধরে হাঁটে—
আর আমার হৃদয়ের ভাঙা টুকরোগুলো
চুপচাপ তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে,
হয়তো আশা খোঁজে, হয়তো হারায় আরো।

তেমন কিছু চাইলাম না—
শুধু একটু গুরুত্ব, একটু ভালোবাসা,
কিন্তু তুমি দিলা না কিছুই।
আজ বুঝি, মানুষ চাইলেও পায় না সবসময়,
ভালোবাসা তো ভাগ্য আর ক্ষত দুটোই দেয়।
রাতে ঘুম আসে না,
কারণ চোখ বন্ধ করলেই তোমার স্মৃতি ঝড় তোলে।
স্মৃতি কি এমনই হয়?
যেটা মানুষকে আগলে ধরে রাখে,
অথচ একইসাথে কষ্টও দেয়?
তোমার হাসিতে যেদিন প্রথম হারিয়ে গিয়েছিলাম,
সেদিনভাবিনি একদিন তোমার নীরবতায় মরতে হবে।
ভালোবাসার রঙ যতটা উজ্জ্বল—
তার বিদায়ের রঙ ঠিক ততটাই নিষ্ঠুর।
মনটা যেন একটা পুরোনো কাগজ—
যেখানে তোমার নাম লেখা,
কিন্তু সময় আর কষ্টে কালির দাগ মুছে গেছে।
তবুও পড়তে গেলেই বুকটা হু হু করে ওঠে।
তোমার সাথে কাটানো সময়গুলো ছিলো স্বপ্ন,
কিন্তু জেগে উঠলে দেখি—
সবই ছিলো ভুল মানুষের সাথে ভুল ভালোবাসা।
কিন্তু দুঃখের বিষয়,
স্বপ্নটা ভাঙলেও ব্যথা এখনো রয়ে গেছে।
হাজার মানুষ ভিড়ে থাকলেও—
আমি এখনো একা,
কারণ তুমি ছিলে আমার পৃথিবী,
আর পৃথিবী হারালে মানুষ কোথায় দাঁড়ায় বলো?
তোমার হাসির জন্য সবকিছু দিতে পারতাম,
কিন্তু তোমার ভুল বুঝে আমাকে কেঁদে যেতে হলো।
দুঃখের বিষয়—
ভালোবাসা দিয়েও সবসময় ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
চায়ের কাপের ধোঁয়ার মতো
আমার আশা ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে।
ভালোবাসায় হার মানতে শিখেছি,
কিন্তু ভুলতে শিখিনি—
কারণ তুমি ভুলে যাওয়ার মত কেউ নও।
তোমাকে ভাবলেই বুকটা ভারী হয়ে ওঠে,
কারণ তুমি ছিলে আলো—
আর আমাকে রেখে গেলে গভীর অন্ধকারে।
এ অন্ধকারও একদিন অভ্যাস হয়ে যাবে,
কিন্তু তোমার অনুপস্থিতি নয়।
ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলে ঠিকই,
কিন্তু আমার মন আটকে আছে সেই দিনে—
যেদিন তুমি শেষে বলেছিলে
“আমরা আর একসাথে নয়…”
সে এক বাক্যে জীবনটাই থেমে গিয়েছিল।
তোমার দেওয়া স্মৃতিগুলো আজ অভিশাপ মনে হয়,
তবু মুছতে পারি না—
কারণ সেগুলোই আমার একমাত্র সম্পদ।
ব্যথা নিয়ে বাঁচা কষ্টের হলেও—
তোমাকে ছাড়া বাঁচা আরও কঠিন।
যে মানুষটাকে হৃদয়ের গভীরে জায়গা দিয়েছিলাম,
আজ সে মানুষটাই সবচেয়ে বড় ক্ষত।
অনুভূতির দাম নেই কারো কাছে—
সবাই শুধু নিজের প্রয়োজনটাই দেখে,
এ কারণেই ভালোবাসা সবচেয়ে বেশি ব্যথা দেয়।
কষ্টের ছন্দ বাংলা
কখনও ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া জীবন চলবেই না,
আজ দেখি— জীবন তো চলে,
শুধু মানুষটাই আর আগের মতো থাকে না।
তোমার অনুপস্থিতি আমাকে বদলে দিয়েছে—
হাসিখুশি মানুষটা আজ নিঃশব্দ হয়ে গেছে।
বলে মন নাকি দুঃখ বুঝে,
কিন্তু আমার মনটা যেন বোবা হয়ে গেছে—
কিছুই আর বলতে পারে না।
শুধু তোমার নামের কাছে গিয়ে
হুমড়ি খেয়ে পড়তে চায় বারবার।
ভালোবাসা ছিলো তোমার কাছে সহজ একটা খেলা,
আর আমি ভেবেছিলাম সেটা আমার পুরো পৃথিবী।
আজ বুঝেছি—
ভুল মানুষকে ভালোবাসলে
মন ভেঙে যাওয়াই শেষ পরিণতি।
তোমার দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো এখন
ধুলো জমা পুরনো কাগজের মতো—
যেন কেউ একসময় খুব যত্নে লিখেছিল,
কিন্তু আজ আর তার কোনো মানে নেই।
সবই ভেঙে গেছে,
আমার মতোই।
চোখ বন্ধ করলে শুধু তোমার মুখটাই ভেসে ওঠে,
আর চোখ খুললেই দেখি—
পুরো পৃথিবী আমার বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে।
তুমি চলে যাওয়ার পর
সবকিছুই যেন বদলে গেল,
কেবল আমার কষ্ট ছাড়া।
আমি চাইনি বেশি কিছু—
শুধু একটু পাশে দাঁড়ানো মানুষ,
যাকে বলবো— “থাকো”
আর সে থেকে যাবে।
কিন্তু তুমি?
তুমি তো থাকার কথা বলেও চলে গেলে।
যদি কখনো মনে পড়ে আমার কথা,
জানো— আমি এখনো তোমার জন্যই কাঁদি।
এ কাঁদাটা দুর্বলতা নয়,
এটা শুধু প্রমাণ
ভালোবাসা সত্যি ছিলো আমার দিক থেকে।
কখনো কখনো মনে হয়,
শূন্যতারও একটা শব্দ আছে—
আর সেটা তোমাকে ছাড়া আমার নীরবতা।
এই নীরবতা এত ভারী কেন জানো?
কারণ এখানে তুমি নেই।
সবাই বলে— মানুষ ভুলে যায়,
কিন্তু আমি ভুলতে পারিনি।
তোমার স্মৃতি এত জোরে আঁকড়ে ধরেছে,
যেন ছেড়ে গেলে আমি ভেঙে পড়বো।
হয়তো সত্যিই তাই।
তোমার হাসিটা ছিলো আমার বাঁচার কারণ,
আর তোমার নীরবতাই হলো আমার মৃত্যুর শুরু।
দুটোই তোমার হাতেই ছিল—
তুমি বেছে নিলে নীরবতাকে।
তোমাকে বিশ্বাস করা আমার সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো,
কিন্তু সেই ভুলটাও এত সুন্দর ছিলো—
যে আজও কষ্ট দিয়েও আমাকে ছাড়ে না।
কত অদ্ভুত, তাই না?
যে মানুষটা কাঁদায়, তাকেই বেশি চাই।
রাত গভীর হলে বুকের ভেতর
বেদনার ঢেউ ঠেলে ওঠে—
মনটা বলে, একটু কথা বলি তোমার সাথে,
কিন্তু বাস্তবতা বলে—
তুমি তো আর আমার নও।
যে মানুষটাকে হারিয়েছি,
তার কাছে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়—
জানি।
তবুও হৃদয় মাঝে মাঝে বলে,
হয়তো একদিন দরজায় কড়া নাড়বে সে,
বলে উঠবে— “চলো ফিরে যাই…”
তোমাকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি,
কিন্তু প্রতিটা স্মৃতি যেন
জেদ ধরে বসে আছে—
আমাকে ছাড়বেই না।
কিন্তু ছাড়ুক বা না ছাড়ুক,
তুমি তো আর ফিরে আসবে না।
তুমি না থাকলে জীবন থেমে যায় না,
কিন্তু সবকিছুর রঙ ফিকে হয়ে যায়।
আজ আমি বেঁচে আছি ঠিকই,
কিন্তু সেই রঙহীন জীবনে
আনন্দের কোনো ছায়া নেই।
তোমার দেওয়া একটা ছোট হাসি
আমার পুরো দিন বদলে দিতো,
আর আজ?
তোমার ছোট একটা ভুলে যাওয়া শব্দ
আমার পুরো জীবনটাই বদলে দিয়েছে।
ইচ্ছে হয় তোমাকে জড়িয়ে ধরে বলি—
এভাবে যেও না,
থেকে যাও আরেকটু।
কিন্তু মানুষ তো চলে যায় ইচ্ছেমতো,
থাকে শুধু তার রেখে যাওয়া কষ্ট।
যেদিন তুমি বলেছিলে— “আমাদের আর সম্ভব নয়”,
সেদিন বুঝেছিলাম—
সবশেষের শুরুটা এভাবেই হয়।
কেউ চিৎকার করে না,
কেউ ঝড় তোলে না,
শুধু নীরবতা এসে সব শেষ করে দেয়।
প্রতিবার তোমাকে ভুলতে চেয়েছি,
প্রতিবারই তোমাকে আরও বেশি মনে পড়েছে।
মনে হয় স্মৃতিগুলো আমাকে ছেড়ে যেতে চায় না—
যেমন তুমি চলে গিয়েও
এখনো কোথাও নরমভাবে রয়ে গেছো।
ভালোবাসার শেষটা এত নিষ্ঠুর হতে পারে
ভাবিনি কখনো।
শেষ পর্যন্ত আমিই হেরে গেলাম,
কারণ আমি সত্যি ভালোবেসেছিলাম—
আর তুমি?
তুমি শুধু গল্প লিখেছিলে,
যার শেষটা আগে থেকেই ঠিক ছিলো।